top of page

পরিবারের সকল সদস্যের মূল চাওয়া-সম্মান

Updated: Jun 1, 2020

একটি সুখী, প্রশান্তময় পরিবার আমরা সবাই চাই। আমরা বাইরে যত কাজ করি, দিন শেষে আমাদের ঘরে ফিরতেই হয়। ঘরে ফিরে আমরা দেখতে চাই স্ত্রীর হাসিমুখ, স্বামীর মমতাময় আচরণ, মা-বাবার স্নেহের ছায়া, সন্তানের উচ্ছলতা-যেখানে সবাই মিলে আনন্দের হাট বসবে। কিন্তু এখনকার সময়ে এসে দেখা যাচ্ছে আমাদের সেই আবেগগুলো, সম্পর্কের উষ্ণতাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। সন্তানের সাথে মা-বাবার দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে। বন্ধ দরজার ওপাশে সে একা। স্বামী-স্ত্রী পাশাপাশি থেকেও মনের দূরত্ব যেন যোজন যোজন। বাবা-মা থেকেও যেন নেই। কেন এমন হচ্ছে?


কারণ বিভিন্ন হতে পারে। যখন সম্পর্কের তিক্ততা সৃষ্টি হয় সেটা যে শুধু একটা কারণেই ঘটে তা নয়। যেহেতু আমরা একইসাথে থাকি, আমাদের পরস্পরের কাছে কিছু প্রত্যাশা থাকে যে আমি এটা চাই, এভাবে চাই। চাওয়া-পাওয়ার এই হিসাব (অর্থাৎ সুস্থ পারিবারিক সম্পর্ক) ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকে যতক্ষণ পরস্পরের প্রতি সম্মান থাকে, শ্রদ্ধা থাকে, নিজেদের মধ্যে একটা সুন্দর বোঝাপড়া থাকে। এই সম্পর্কটা স্বাভাবিকভাবেই একতরফা নয়। এমন নয় যে আমি শুধু পেয়ে যাব, কিছু দেবো না। আমাদের বহুবিধ পারিবারিক সমস্যার মূলে কিন্তু থাকে এই দেয়া-নেয়ার হিসাব না মেলার ব্যর্থতা। প্রবৃত্তিগত দিক থেকে আমরা সবাই শুধু পেতে চাই। কিন্তু পাওয়ার আগে যে দিতে হবে সেই বিষয়টাই আমাদের স্মরণে থাকে না। আমি কী চাইছি সেটা আমরা ফেসবুকের দেয়ালে দেয়ালে লিখতে কার্পণ্য করি না-আমি বড় একা, আমার বড় দুঃখ, কেউ কথা রাখে নি-কিন্তু অন্য সবাই কী চাইছেন সেটা বোঝার আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা, তাড়না কোনোটাই হয়তো কাজ করে না। যদি কাজ করত, দেখা যেত আমাদের পরিবার অনেক সুখের হতো, শান্তির আলয় হতো।


একটি পারিবারিক ওয়ার্কশপে শ্রদ্ধেয় গুরুজী হযরত জালালউদ্দিন রুমির একটি গল্প বলেছিলেন। গল্পটি হচ্ছে-তিন মুসাফিরের গল্প। তিনজন বিদেশি একত্র হয়েছে-একজন আরব, একজন পার্সিয়ান, একজন রোমান। তারা একজন অপরজনের ভাষা না বুঝলেও আকারে ইঙ্গিতে ভাব বিনিময় করছেন এবং খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে। পথে যেতে যেতে তারা তিনজন খুব গল্প করছেন। ভাষা জানা না থাকলেও যিনি যেভাবে বোঝাতে পারছেন, বোঝাচ্ছেন। পথে চলতে চলতে হঠাৎ রাস্তার মধ্যে একটা স্বর্ণমুদ্রা পেলেন তারা। তিনজনে ওটা ধরে ফেললেন। তিনজনেরই দাবি যে এটা তার। এখন এটা দিয়ে কী করবে ভাবতে ভাবতে দেখলেন যে সামনে বাজার আছে।


আরবি যে তিনি বললেন যে দেখ, এটা দিয়ে আমরা ইনাব কিনব। ফার্সি যে তিনি বললেন যে না, এটা দিয়ে আঙুর কিনব। রোমান বললেন তোমরা কী বলছ, এটা দিয়ে তো ভিটিস কিনতে হবে। এবং তিনজনের মধ্যে তুমুল তর্ক হচ্ছে। একজন বলছেন ইনাব কিনবেন, একজন বলছেন আঙুর কিনবেন, একজন ভিটিস কিনবেন। এতক্ষণ যে আনন্দ ছিল সে আনন্দ মুহূর্তে মাটি। ঝগড়া, কলহ শুরু হয়ে গেল। প্রত্যেকেই নিজের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। রুমি বলেন, আসলে এদের জন্যে আর কিছুই না, প্রয়োজন ছিল একজন ইন্টারপ্রিটরের, একজন অনুবাদকের। কারণ আঙুর হচ্ছে ফার্সি শব্দ, অবশ্য আমরা বাংলাতেও আঙুরই বলি। আঙুরের আরবি নাম হচ্ছে ইনাব। আর রোমান নাম হচ্ছে ভিটিস। তিনজনে একই জিনিস কিনবেন কিন্তু কেউ কারো ভাষা বোঝেন না, তাই ঝগড়া করছেন।

আসলে আমাদের পারিবারিক যত সমস্যা, সমস্ত সমস্যার ধরন এরকমই-যে একজন আঙুর কিনবেন, একজন ইনাব কিনবেন, একজন ভিটিস কিনবেন। আর এ সমস্ত সমস্যার মূল হচ্ছে একজন ট্রান্সলেটরের অভাব। যিনি বুঝিয়ে দেবেন যে, না তোমরা তিনজন যা চাচ্ছ এটা একই জিনিস।


পারিবারিক জীবনের মূল চাওয়া হচ্ছে সম্মান


আসলে একটা পরিবারে মানুষ কী চায়? একজন নারী কী চান, পুরুষ কী চান, মা কী চান, সন্তান কী চান, শ্বশুর কী চান, শাশুড়ি কী চান? তারা সম্মান চান। সম্মান নিয়ে বাঁচতে চান। আমার এখানে একটা মর্যাদা আছে, আমার একটা সম্মান আছে, আমার একটা স্বীকৃতি আছে এবং তারা চান যে তাকে একটু মমতা দিয়ে, একটু শ্রদ্ধা দিয়ে দেখা হোক। শুধু এই সম্মান এবং মমতাটুকু চান। আর বাকি জিনিসগুলো খাওয়া-দাওয়া এবং অন্যান্য জিনিস হচ্ছে বৈষয়িক বা জৈবিক ব্যাপার।

একজন মানুষের পরিবার থেকে মূল চাওয়া একটাই। পরিবারে-একজন স্ত্রী চান যে স্বামী আমাকে একটু মর্যাদা দিক, একটু সম্মান করুক। আমি যে পরিশ্রম করছি, আমার পরিশ্রম করতে কোনো অনীহা নেই। স্বামী এটাকে স্বীকার করুক যে, হাঁ তুমি খুব পরিশ্রম করছ। স্বামী চান যে ক্লান্ত হয়ে ঘরে আসছেন, স্ত্রী একটু দৌড়ে আসুক। আহা রে! সারাদিন অনেক ক্লান্ত হয়ে আসছ। এটুকুই তো!

সন্তান কী চান? আসলে সন্তানও সম্মান চান। ছোটবেলা থেকেই আমরা সন্তানদেরকে ছোট করে রাখি। কথায় কথায় বলি যে ‘ও ছোট মানুষ, ও কী বুঝবে’? অর্থাৎ ছোট হোক বড় হোক, সে যে মানুষ সেটা আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ভুলে যাই। এখন যে শিশুটি ছোটবেলা থেকেই শুনে আসে যে সে ছোট মানুষ, তার কিছু বোঝার দরকার নাই, শোনার দরকার নাই, সংসার/ পরিবারে তার কোনোকিছু না করলেও চলবে, বড় হয়েও তার মধ্যে ছেলেমানুষি প্রবণতা কাজ করবে। যেমন ধরুন, যে বাচ্চারা খায় না বা খেতে চায় না, তাদের সম্মানিত অভিভাবকেরা সাধারণত ভুলবশত যে কাজটা করেন সেটা হলো-ফোনে অমুক ভাবীর সাথে কথা বলতে গিয়ে কিংবা বাসায় কোনো আপা বেড়াতে এলে তাকে শুনিয়ে কাতর কণ্ঠে বলেন যে, আমার বাচ্চা খেতে চায় না। এবং দেখা যায়, বাচ্চাও যখন শোনে আন্টির সামনে মা তার সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছেন, তখন সে জেদের বশে ঠিক করে, নাহ্, আগে যা একটু খেতাম, এখন তা-ও খাব না। কিন্তু সন্তানকে যদি আমরা সরাসরি বোঝাতে পারি যে কেন কাজটি করা প্রয়োজন (একজন বন্ধুর মতো) তাহলে কিন্তু সে শুনবে। অর্থাৎ, সন্তানের বয়স যা-ই হোক না কেন তারও একটা আত্মসম্মানবোধ রয়েছে। সেই সম্মানটুকু তাকে দিতে হবে।


আঙুর বলি, ভিটিস বলি আর ইনাব বলি। একই। সম্মান ও মমতা। পরিবারের প্রত্যেক সদস্য এটা চান। গৃহকর্মী যে তিনিও চান যে আমাকে একটু মর্যাদা দিক। এই মানুষটি আমাদের একটু আরামের জন্যে দিনরাত পরিশ্রম করছেন, সকালে সবার আগে ঘুম থেকে উঠছেন, সবার শেষে ঘুমাতে যাচ্ছেন। তার কী চাওয়া? তার চাওয়া হচ্ছে-আমি এত কাজ করে দিচ্ছি, আমার কোনো মর্যাদা নাই। আমাকে একটু মর্যাদা দিক। আমাকে একটু মমতা দিক। একটু ভালবাসা দিক। কাজের একটা স্বীকৃতি দিক।

আর যখনই এই সম্মান, মমতা পাওয়া না যায় সমস্যার শুরু হয়। তখন ভেতরে ক্রোধ সৃষ্টি হয়। এই ক্রোধটা ভায়োলেন্সরূপে প্রকাশ পেতে পারে, এটা গালিগালাজ, ভাঙচুর, মারামারিরূপে প্রকাশ পেতে পারে। কখনো কখনো প্রকাশ করতে না পারলে এটা দুঃখ হিসেবে, ডিপ্রেশন হিসেবে, কষ্ট হিসেবে মনের ভেতরে জমাট বাঁধে। এবং আমরা যদি দেখি, পরিবারিক সমস্যার শিকড় হচ্ছে এখানটায় যে, যাকে যতটুকু সম্মান দেয়া দরকার, সেই সম্মানটুকু যখন তিনি না পান বা সে সম্মানটুকু যখন আমরা দিতে পারি না সমস্যার শুরু হয় তখন।


স্বামী যদি স্ত্রীর অধিকারকে শ্রদ্ধা না করেন, স্ত্রী যদি স্বামীর অধিকারকে শ্রদ্ধা না করেন তাহলে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে এটা আপনাতেই বিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যায়। আবার অনেক মা-বাবা আছেন যারা সন্তানের সামনে ঝগড়া থেকে শুরু করে মারামারি পর্যন্ত করেন। আসলে সন্তানকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করতে হবে। একজন আরেকজনকে শ্রদ্ধা করতে না পারলে, কখনো প্রত্যাশা করা যাবে না যে, সন্তান আপনাদেরকে শ্রদ্ধা করবে। সুসন্তান পেতে হলে প্রথম প্রয়োজন স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্মানবোধ।

অন্যের কাছ থেকে সম্মান পেতে চাইলে আগে তাদেরকে সম্মান দিতে হবে। নিজেরা ভালো থাকলাম কিন্তু খাবার টেবিলে বসে অন্যের গীবত গাইলাম, পরিবারে সুখ-শান্তি থাকবে কীভাবে? স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের আত্মীয়ের প্রতি যে নিন্দা পরচর্চা গীবত করা হয় তাতে কী হয়? এই যে অসম্মানজনক কথা বলা, এগুলো পরিবারে সদস্যদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি আর দূরত্ব বাড়াতে থাকে। গীবত করছি অর্থাৎ আমার ছেলে-আমার মেয়েও কিন্তু এই খারাপ কথাগুলো শুনছেন। পরবর্তীতে তারাও কিন্তু শিখবেন কীভাবে বাবা-মা’র গীবত করতে হয়। তারপর ছেলে সন্তান আর মেয়ে সন্তানের মধ্যে পার্থক্য করা। ছেলে আপন আর মেয়ে পর। ছেলেকে মুরগির রান আর মেয়েকে মুরগির গলা। এই অসম্মানজনক আচরণের পরিণতি কখনোই ভালো হয় না। হয়তো সেই মা-বাবাকে তাদের শেষ জীবন মেয়ের আশ্রয়েই থাকতে হয়।



পারস্পরিক সম্মান দিতে কথার গুরুত্ব অনেক


কথা অত্যন্ত শক্তিশালী। এজন্যেই কথা বলতে হবে সরাসরি, আন্তরিকভাবে এবং মিষ্টি করে। পবিত্র কোরআন শরীফে বলা হয়েছে, (হে নবী!) তুমি আমার বিশ্বাসী বান্দাদের বলো, (যারা বিশ্বাসী নয়, তাদের সাথেও) তারা যেন সবসময় ভালো কথা বলে, সুন্দর কথা বলে (সূরা বনি ইসরাইল : ৫৩)। পারিবারিক ক্ষেত্রে আসলে এই জিনিসটার অভাব সবচেয়ে বেশি। আমরা ভালো ভালো কথাই বলি, কিন্তু সবসময় কি সুন্দরভাবে বলি? বলি যে, এই তুই পড়াশোনা কর। পড়তে বলা ভালো কথা কিন্তু এমনভাবে বললাম যে পড়ার প্রতি তার বিরক্তি ধরে গেল।


আসলে নিজের মুখের কথার দায়িত্ব নিতে হবে নিজেকে। আমি যে-ই হই না কেন, বাবা, মা, কিংবা সন্তান। আমরা তো সবাই ভালো হতে চাই, ভালো থাকতে চাই। এবং এজন্যে আগে ভালো হতে হবে আমাদের। নবীজী (স) বলেছেন-‘তারাই উত্তম যারা তাদের পবিরবারের কাছে ভালো, যেমন আমি আমার পরিবারের কাছে ভালো’ (তিরমিজী)। তাই পরিবারের সকলের সঙ্গে সদাচরণ করা, তাদের সম্মান করা, শ্রদ্ধা করা এবং পর্যাপ্ত মমতা দেয়া-এটা নিজেকে দিয়েই শুরু করতে হবে। আসলে এই জিনিসগুলো তো আমি নিজেই চাই। আমি যা চাই, তাই তো আমাকে প্রথমে দিতে হবে। বাইবেলে বলা হয়েছে-‘প্রতিটি বিষয়ে অন্যের সঙ্গে সেই আচরণই করবে যা তুমি তার কাছে প্রত্যাশা করো’। (মথি ৭:১২)


তাই আমাদের অসম্মানজনক নির্মম আচার-আচরণের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। পরিবারে আমরা এ ধরনের উক্তি বা আচরণ বর্জন করতে পারি-‘তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না’, ‘তোমার বুদ্ধিতে কাজ করলে সব শেষ’, ‘তুই মরতে পারিস না’, ‘লজ্জা নেই-এত বয়স হয়েছে বিয়ে হচ্ছে না’, ‘(বাবা মা-কে) যত বুড়ো হচ্ছো, ভীমরতিতে ধরছে’, ‘নিজেদের পথ নিজেরা দেখো-আমি আর তোমাদের টানতে পারব না’… ইত্যাদি ইত্যাদি। সদাচরণ এবং সুবচন অভ্যাস নিজের ভেতরে গড়ার জন্যে আমরা সুবচন কণিকার ভুল এবং সঠিক বচনগুলো দেখে নিতে পারি। আবাসস্থলে শিষ্টাচার কণিকার পর্বটিতে চোখ বোলাতে পারি। এতে আমরা সদাচারী হবো, শিষ্টাচারী হবো। পরিবারের সদস্যদের সাথে সম্মানজনক আচরণ করতে পারব।



আরো কীভাবে সম্মান দিতে পারি পরিবারের সদস্যদের?


আসলে সম্মান মানে হচ্ছে একজনের প্রতি একটু মনোযোগ ও মমতা দেয়া। যতটুকু মর্যাদা তার প্রাপ্য তা তাকে দেয়া, তাকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করা, তিনিও যে গুরুত্বপূর্ণ একজন-এই বিষয়টি তুলে আনা। যদি আমরা পরিবারের সদস্যদের তাদের প্রাপ্য সম্মান দিতে পারি তাহলে পারিবারিক সম্পর্কগুলো মধুর হবে, আমাদের মানসিক প্রশান্তি বাড়বে, আমাদের সুখের পরিমাণ বাড়বে।

তাই আজকে থেকে আমরা নিজেরা ঠিক করতে পারি যে, আমি কীভাবে পরিবারের সদস্যদের তাদের প্রাপ্য সম্মান দিতে পারি। এটা হতে পারে (১) বাসায় ঢোকার সময় বা বের হওয়ার সময় সালাম দেয়া (২) হাসিমুখে কুশল জিজ্ঞেস করা, (৩) মা/ স্ত্রী প্রতিদিন রান্না করেন তাকে ধন্যবাদ দেয়া, তার রান্নার প্রশংসা করা (৪) ছোট্ট সন্তানকে আদর করে কোলে তুলে নেয়া, (৫) স্বামীকে সুন্দর কথা বলা, (৬) বাবার সাথে সুন্দর আচরণ করা, তার খোঁজখবর নেয়া।


আসলে একটু ভালো কথা শুনলে বা বললে মন এমনিতেই জুড়িয়ে যায়। এটাই তো সম্মান, এটাইতো মমত্ববোধ। যদি বাসায় কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য থাকেন, বাবা-মা অথবা দাদা-দাদী, নানা-নানী, তাদেরকে আমরা যেন অন্তর থেকে সম্মান করি। দিনে অন্তত কিছুটা সময় যেন তাদের জন্যে রাখি। এটা পাঁচ বা দশ মিনিট হোক এবং এই সময়ে সমস্ত মনোযোগ জুড়ে যেন এই মানুষটিই থাকেন। তার পাশে গিয়ে বসা, মজার কোনো গল্প তার সাথে শেয়ার করা। এতে তার হৃদয় নিংড়ানো দোয়া আমরা পাব। একদিন আমাদের সবারই বয়স হবে। দেহ নরম হতে পারে, সাথে সাথে মনটাও নরম হয়ে আসতে পারে। তখন আমরাও নিজেকে বঞ্চিত মনে করব না বা সঙ্গীহীন মনে করতে হবে না। প্রাকৃতিকভাবেই দেখব যে, আমাদের চারপাশে সবসময় কেউ না কেউ আছেনই।'



একদিনে বা একবারে কিন্তু নিজেকে পরিবর্তন করা যায় না। একটা একটা করে করতে হয়। আর সেটাই আমরা করছি নিয়মিত মেডিটেশন চর্চার মাধ্যমে।


উপসংহারে আমরা বলতে চাই, একটি পরিবারে নানা ধরনের, নানা মতের মানুষ থাকতে পারেন। প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা থাকতে পারে। আবার অনেকে মেধা ও যোগ্যতার দিক দিয়েও ভিন্ন হতে পারেন। এদের সবাইকে একই বন্ধনে বেঁধে রাখে সম্মান ও মমতা। এই সম্মান, মর্যাদা, সমমর্মিতা যখন সৃষ্টি হবে, সুখের জন্যে বাকি সব উপকরণ আসাটা খুব সহজ হয়ে যাবে। এজন্যে সকল অবস্থায় পরিবারের সবার জন্যে দোয়া করব। আসলে আমরা যার জন্যে দোয়া করব, তার প্রতি আমাদের মমতা বাড়তে থাকবে। আর দোয়ার শক্তি সকল রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ, কষ্ট, ঘৃণা, ভুল বোঝাবুঝি দূর করে দিতে পারে। পরম করুণাময় আমাদের সবার পরিবারকে সুখী পরিবারের অন্তর্ভুক্ত করুন। এতক্ষণ এত মনোযোগ দিয়ে আলোচনা শোনার জন্যে আমার অভিনন্দন গ্রহণ করুন। ভালো থাকুন। খোদা হাফেজ।


This blog is Collected



8 views0 comments
bottom of page